1. info@bdchannel4.com : BD Channel 4 :
বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৫ পূর্বাহ্ন

১লা সেপ্টেম্বর ধোবাজোড়া গণহত্যা দিবস, সেদিন শহিদ হয়েছিলেন ২০ জন মুক্তিকামী বিশিষ্টজন

আশরাফুল ইসলাম তুষার ও মোক্তার হোসেন গোলাপ।।
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৩৮ বার পড়া হয়েছে

আগামীকাল ১লা সেপ্টেম্বর। ধোবাজোড়া গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ধোবাজোড়া গ্রামে পাক হানাদার বাহিনী ৭ ঘন্টা ব্যাপী অপারেশন চালিয়ে ২০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।

পাক হানাদার বাহিনীর দ্বারা যখন সারাদেশ অবরুদ্ধ তখন কিশোরগঞ্জ জেলার বিস্তীর্ণ হাওর অঞ্চল ছিল শক্রমুক্ত। অগাস্ট মাসের মাঝামাঝি বর্ষাকালের শেষ পর্যায়ে স্থানীয় রাজাকার ও আল বদরদের সহযোগীতায় কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা, অষ্টগ্রাম, নিকলী উপজেলায় পাক-বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করে।

তখন থেকে হাওর অঞ্চলে রাজাকার আলবদরদের সহযোগিতায় পাক বাহিনীর তাণ্ডবলীলা শুরু হয়। অন্যদিকে বর্তমান মিঠামইন উপজেলার ধোবাজোড়া গ্রামের হাজী সওদাগর ভূইয়ার বাড়িতে গড়ে উঠে মুক্তি বাহিনীর একটি ক্যাম্প। এই বাড়ি থেকে মুক্তিযোদ্ধারা হাওর অঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাতেন।

১৯৭১ সনের ১ সেপ্টেম্বর খুব ভোরে ধোবাজোড়ার পাশের গ্রাম কান্দিপাড়ার কুখ্যাত রাজাকার কমান্ডার কুরবান আলীর নেত্বতে সশস্ত্র অবস্থায় পাক-হানাদার বাহিনীর একটি দল পরিকল্পিতভাবে নৌকা যোগে গ্রামটি চারিদিক ঘেরাও করে ফেলে। সে দিন ধোবাজোড়া গ্রামে মুক্তিবাহিনীর কেউ ছিলেন না।

গ্রামের লোকজন কিছু বুঝার আগেই গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পাক-বাহিনী গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে পড়ে ঘুমন্ত অবস্থায় প্রায় দেড়শতাধিক লোককে আটক করে ফেলে। হাজী মোঃ.সওদাগর ভূইয়া, আব্দুল গণি ভূইয়া, রওশন ভূইয়ার বাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে কোন মুক্তিযোদ্ধাকে না পেয়ে গ্রামের মানুষের উপর অমানবিক নির্যাতন চালায় হানাদার বাহিনী। বর্ষাকাল থাকায় গ্রামের অধিকাংশ মানুষ পালাতে চেষ্টা করেও পালাতে পারেননি।

এ ঘটনার পর রাজাকার আলবদররা গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ করে। এবং শত শত গবাধি পশু অগ্নিদদ্ধ হয়ে মারা যায়। পাক-হানাদার বাহিনী ধোবাজোড়া গ্রাম থেকে চলে যাওয়ার সময় দেড়শতাধিক লোকের মধ্য থেকে বাছাই করে নেতৃত্বস্থানীয় বুদ্ধিজীবি ও বিশিষ্ট বিশজন ব্যক্তিকে ইটনা থানার ক্যম্পে নিয়ে যায়।

সেখানে তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন ও অত্যাচার চালিয়ে হত্যা করে হানাদার বাহিনী। শহীদদের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। পেরিয়ে গেছে ৫৩টি বছর। কিন্তু ধোবাজোড়া গ্রামে এই গণহত্যার স্মৃতি রক্ষায় নতুন প্রজন্মের জন্য গড়ে উঠেনি কোন স্মৃতি ফলক। শহীদের তালিকায় লিপিবদ্ধ হয়নি তাদের নাম।

পাকহানাদার বাহিনী সেদিন যাদের নির্মমভাবে হত্যা করে  তারা হলেন -আব্দল মজিদ ভূইয়া (আওয়ামীলীগ ঘাগড়া ইউনিয়ন শাখার সভাপতি ), আব্দলআজিজ ভূইয়া ( শিক্ষক ) ,আব্দল লতিফ ভূইয়া ( শিক্ষক ),আব্দল মান্নান ভূইয়া (মিঠামইন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক), আব্দুল গণি ভূইয়া (ইউপি চেয়ারম্যান ), রমিজউদ্দিন ভূইয়া (ইউপি সচিব ),সিদ্দিকুর রহমান ভূইয়া (শিক্ষক), অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন ভূইয়া ,আবদুর রাশিদ ভূইয়া (ছাত্র নেতা ),আব্দর রউফ ভূইয়া, রোকন(ছাত্রনেতা). রোকনুজ্জামান ভূইয়া (ছাত্রনেতা), জহিরউদ্দিন ভূইয়া,আবদুল খালেক ভূইয়া,নূর আলী ভূইয়া,বুধাই ভূইয়া,রমজান ভূইয়া,আবু জামাল (জাহের),চান্দু মিয়া ও সিরাজ মিয়া। তাদের কে হত্যা করার পর ইটনার ভয়রায় মাটি চাপা দেয় পাক হানাদার বাহিনী। এছাড়া পাক বাহিনীর হাতে ইদ্রিস আলী মারাত্মকভাবে আহত হয়ে বেঁচে যান।

এ দিবস উপলক্ষে শহীদ চত্বরে বেচেঁ থাকা শহীদদের স্বজনেরা ও এলাকাবাসী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচিতে রয়েছে বিকাল ৪টায় কোরআনখানী ,মিলাদ, দোয়া মাহফিল, শোক ও আলোচনা সভা।

এছাড়াও মিঠামইন হাজী তায়েব উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক শহীদ আব্দুর মান্নান সাহেবের স্মৃতি চারণ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং