বাদল রহমানের মৃত্যুর দুই মাসেও উদঘাটিত হয়নি কোন ক্লু , এবার তদন্তভার পেলো পিবিআই
আশরাফুল ইসলাম তুষার, চিফ রিপোর্টার।।
প্রকাশিত:
শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
৬৩
বার পড়া হয়েছে
কিশোরগঞ্জ শহরের একজন পরিচিত মুখ ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক বাদল রহমান।তিনি দানবীর হিসেবেও ছিলেন বেশ পরিচিত। তার রহস্যজনক মৃত্যুর ২ মাস পেরিয়ে গেলেও কোন কুল কিনারা করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ময়নাতদন্তে পানিতে ডুবে মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেলেও তাঁর ভিসেরা সংগ্রহ করে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। এখনও যার প্রতিবেদন আসেনি। ফলে স্বজনসহ জনমনে বিচার নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে মামলাটি পিবিআইয়ে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ।
গত ৯ জুলাই সকালে কিশোরগঞ্জ শহরের বেপারি বাড়ি এলাকায় একটি পুকুরে জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক বাদল রহমানের লাশ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগের রাতে বাদল রহমান খরমপট্টি এলাকার ‘মোল্লাবাড়ি’ নামে ভাড়া বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন। কখন কীভাবে তিনি পুকুরে গেলেন, কীভাবেই বা মৃত্যু হলো, এ বিষয়টি ডালপালা ছড়াচ্ছে।
এ ঘটনায় বাদল রহমানের বড় ছেলে আসিফুর রহমান শাহীল বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। তবে দুই মাসেও মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন এলাকাবাসীসহ তার স্বজনরা।
জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক আহমাদ ফরিদ বলেন,বাদল রহমানের মৃত্যু রহস্যজনক। এতদিনেও এ রহস্য উদঘাটিত না হওয়া দুঃখজনক। পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে জেনে আমি আশাবাদী এবার হয়তো এ মৃত্যুরহস্য উদঘাটিত হবে। তিনি খুন হয়ে থাকলে খুনিরা আইনের আওতায় আসবে এমনটাই আমার প্রত্যাশা।
সিভিল সার্জন সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের সময় বাদলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। যে কারণে ভিসেরা পরীক্ষাও অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করতে হচ্ছে। এ কারণেই প্রতিবেদন পেতে বিলম্ব হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার মো. রাসেল শেখ বলেছেন, পুলিশের সব শাখা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ক্লু হাতে আসেনি। এখন ভিসেরা প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। তবে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে মামলাটি পিবিআইর কাছে হস্তান্তরের একটি নির্দেশ এসেছে। এখন সেই প্রক্রিয়া চলছে।
বাদল রহমান এলজিইডির প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার এবং কিশোরগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতিও ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ঘনিষ্টজন ছিলেন তিনি। ২০২১ সালে ২৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর প্রথম স্ত্রী শারমিন আক্তার লুৎফা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। চলতি বছরের ৩ মে তিনি পুরান ঢাকার হাটখোলা এলাকার আয়েশা আহমেদকে বিয়ে করেন। এরপর তার নিজের বাসা ‘লুংফা নিবাস’ ছেড়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে আধা কিলোমিটার দূরে মোল্লাবাড়ির একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে সেখানেই বসবাস শুরু করেন। গত ১৯ জুলাই সেই ফ্ল্যাটে থাকা অবস্থাতেই তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়।