প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৩, ৩:০২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩, ১০:১৫ এ.এম
বাজার যেন আগুন, মরা সহজ বাঁচা কঠিন-ক্রেতাদের আক্ষেপ
রাজমিস্ত্রি বাদশা মিয়া দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললেন বাজার যেন আগুন, মরা সহজ বাঁচা কঠিন। একদিন কামে গেলে পাই ৪’শ থেকে ৪৫০ টাকা। কিন্তু সকাল-সন্ধ্যায় খাবার খরচ লাগে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা। চাল, ডাল, পিঁয়াজ, মরিচ, সবজি সবগুলোর দাম হু হু করে বাড়ছে, কিন্তু কামাই তো বাড়ে না।
রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর সকালে বাজারে এসে কথা গুলো বলছিলেন তিনি। তার একার আয়ে পাঁচ সদস্যের সংসার চালাতেয়। তার মতো সীমিত আয়ের পরিবারগুলো ঊর্ধ্বমুখী বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। বর্তমানে ৫০ টাকার নিচে কোনো ধরনের সবজি মিলছে না। চড়া মাছ মাংস ও ডিমের দামও। নিত্যপণ্যের দাম দফায় দফায় বাড়ায় ক্রেতারা বলছেন আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মিলছে না। বাজার করতে এসে দিশাহারা হয়ে পড়ছেন তারা। চাহিদামতো পণ্য সামগ্রী কিনে ঘরে ফিরতে পারছেন না তারা।
শহরের বড়বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মূলা ৭০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় হচ্ছে।
এ ছাড়াও প্রতি কেজি বয়লার মুরগি ১৯০, সোনালি ৩শ’ , দেশি মুরগি ৪৫০ ও লেয়ার ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে । ডিম প্রতি হালি ৫০ টাকা, মাছ সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা কেজি হরে বিক্রি হচ্ছে। ওই সময় বাজারে ব্যাগ হাতে এক দোকান থেকে আর এক দোকান ঘুরছিলেন রুবেল মিয়া নামের একজন রিকশা চালক। তিনি বলেন একদিন বাজার করতে হাজার টাকা লাগে। আত্মীয়-স্বজনদের কাছে ধার করে চলতে হচ্ছে। আমার মতো মানুষ অনেক কষ্টে আছে। কথা হয় গৃহকর্মী ময়না বেগমের সাথে। তিনি বলেন, হোটেলের থালাবাসন মেজে ৩৫০ টাকা পাই, সেই টাকায় চার সদস্যের সংসারে ঠিকমতো ডাল-ভাত হয় না। মাছ মাংস তো ছয় মাসে একদিনেও জোটে না। এখন শখও করে ডিম খাওয়া যায় না। সবজির যে দাম আমাদের মরা সহজ, বাঁচাই কঠিন হয়ে গেছে।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বড় বাজারের ব্যবসায়ী সুমন বলেন, আমরা ত আর ইচ্ছে করে দাম বাড়াইনি। বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে তাই একটু বাড়তি দামে বিক্রয় করি। মুরগি ব্যবসায়ী হাবিব বলেন, সবকিছুর মতো মুরগির সরবরাহ কম ও ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মুরগির দাম বেড়েছে।
বাজার দর নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হৃদয় রঞ্জন বণিক বলেন, আমাদের নিয়মিত বাজার মনিটরিং চলছে। কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে আর ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে করে দাম বেশি নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত