ময়মনসিংহের ত্রিশালের বাগান গ্রামে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশ দিয়ে প্রবাহিত গজারিয়া খাল ভরাট করে মোজাদ্দেদিয়া ফিলিং স্টেশন নির্মাণ করায় খালের প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে জলাবদ্ধতার কারণে বাগান গ্রামের শত শত কৃষক ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করলে ইউএনও সরেজিমন তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিবেন বলে কৃষকদেরকে আশ্বস্ত করলেও এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রশাসন।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ত্রিশাল উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগান,আউলটিয়া ও কোনাবাড়ী এবং সাখুয়া ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের কিছু অংশের পানি গজারিয়া খাল দিয়ে খিরু নদীতে গিয়ে নামতো। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্ব অংশের পানি মহাসড়কের কালভার্ট দিয়ে গজারিয়া খাল দিয়ে চলে যাওয়ায় এই গ্রামগুলোতে কখনও জলাবদ্ধতা হতো না। গত কয়েক বছর আগে এই গজারিয়া খালটির উৎপত্তি মুখে কালর্ভাটি বন্ধ করে সেখানে নির্মাণ করা হয় মোজাদ্দেদিয়া ফিলিং ও এলপিজি স্টেশন। এটি নির্মাণের কারণে ত্রিশাল উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগান, আউলটিয়া, কোনাবাড়ী ও সাখুয়া ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের কৃষকদের ফসল, মাছের খামারগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ছাড়াও অতি বৃষ্টির কারণে কখনও কখনও কৃষকদের ঘরে পানি উঠে পড়ে।
গত সোমবার, ৯ অক্টোবর সকালে এ কারণে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট খালটি দখল মুক্ত করার জন্য অভিযোগ করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুয়েল আহমেদ, সহকারি কমিশনার (ভূমি) হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
বাগান গ্রামের ৭ নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য জোবায়ের হোসেন জানান, জলাবদ্ধতার কারণে সাধারণ মানুষ ও কৃষকদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এই ফিলিং স্টেশন স্থাপনের পর থেকেই এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।
বাগান ইসলামীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রশিদ সরকার বলেন,আমরা পানি নিষ্কাষনের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে আমরা মানববন্ধনসহ আন্দোলন করবো। প্রয়োজনে মামলা করবো।
বাগান গ্রামের বিশিষ্ট ঠিকাদার গোলাম মোস্তফা মঙ্গল জানান, গজারিয়া খাল দিয়ে এই ৪ গ্রামের পানি খিরু নদীতে চলে যেতো। আমার জন্মের আগে থেকেই এই খালটি রয়েছে। আমি ৫০ বছর ধরে এই খালটি দেখছি। বিআরএস রেকর্ডে খালের নাম রয়েছে। বাস্তবে এখন খালটি দখল হয়ে সেখানে পেট্রোল পাম্প হয়েছে। আমরা চাই খালটি আবার পুনঃউদ্ধার করা হউক।
ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুয়েল আহমেদ জানান,এ ব্যাপারে সহকারি কমিশনার (ভূমি)কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করবো ইনশাল্লাহ।