তথ্য দিতে গড়িমসি, ডিসির নির্দেশও মানছেন না গৌরীপুরের ইউএনও
উবায়দুল্লাহ রুমি, স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ।।
প্রকাশিত:
বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৩
১২২
বার পড়া হয়েছে
উপজেলা নির্বাহী অফিসার গৌরীপুর) ফৌজিয়া নাজনীন
সরকারের নানা প্রকল্পে দুর্নীতি-অনিয়ম ও হরিলুটের ঘটনা আড়াল করতে তথ্য অধিকার আইনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনীন। বিভিন্ন তথ্য প্রাপ্তির জন্য স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে মাসের পর মাস পেরুলেও তথ্য দেননি তিনি। উল্টো জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিভিন্ন হুমকী দেয়াচ্ছেন তিনি। সাংবাদিকদের তথ্য দেয়ার জন্য ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক প্রায় ৩ মাস আগে ইউএনও ফৌজিয়া নাজনীনকে লিখিত নির্দেশ দিলেও সেই নির্দেশও অমান্য করে যাচ্ছেন তিনি।
বাংলাদেশের সংবিধানে তথ্য প্রাপ্তির অধিকার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু ফৌজিয়া নাজনীন একজন সরকারী কর্মকর্তা হয়েও সরকারের সেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখাচ্ছেন। ইউএনও’র এমন স্বেচ্ছাচারী আচরণে স্থানীয় সাংবাদিক ও সচেতন মহলে বর্তমানে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।
জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনীন এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারী ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। রাতের আঁধারে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন উধাও, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে নামাজখানায় দোকান নির্মাণ, তথ্য দিতে গড়িমসি ও সৌদির দুম্বার মাংস রাতের আঁধারে গোপনে ভাগাভাগির ঘটনা সম্প্রতি সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় ক্ষুব্দ ইউএনও স্থানীয় দুই সাংবাদিককে ইউএনও’র সরকারি ফেসবুক আইডি থেকে সরিয়ে দেন। কোন তথ্য চেয়ে মোবাইলে ফোন করা হলে সাংবাদিকদের কল কেটে দেন তিনি।
স্থানীয় সাংবাদিক হলি সিয়াম শ্রাবণ বলেন- ‘চলতি অর্থবছরে এ উপজেলায় সরকারের কর্মসৃজন প্রকল্পের তালিকা প্রাপ্তির জন্য ২ ফেব্রুয়ারি তথ্য চেয়ে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করি আমি। আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে তথ্য না পেয়ে গত এপ্রিল মাসে তারিখে জেলা প্রশাসক বরাবরে এ বিষয়ে আপিল করি। আপিলের বিষয়টি আমলে নিয়ে গত মে মাসের ১০ তারিখে শুনানীর দিন ধার্য্য করেন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক। শুনানীর দিন আমার বক্তব্য শুনে আপিল মঞ্জুর করে তথ্য দেয়ার জন্য গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও ফৌজিয়া নাজনীনকে লিখিতভাবে নির্দেশ প্রদান করেন (ডিসি) মো. মুস্তাফিজার রহমান। কিন্তু ডিসির নির্দেশের প্রায় ৩ মাস পার হলেও আমাকে তথ্য দেননি ইউএনও ফৌজিয়া নাজনীন।’
তিনি আরও জানান-শুধু তিনি নন আরও কয়েকজন স্থানীয় সাংবাদিক বিভিন্ন প্রকল্পের তথ্য চেয়ে আবেদন করলেও তাদেরকে অদ্যবধি পর্যন্ত কোন তথ্য দেননি ইউএনও ফৌজিয়া নাজনীন। ইউএনও’র বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার ঘটনায় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ বিভিন্নভাবে হুমকী দেয়াচ্ছেন তিনি।
এ বিষয়ে ইউএনও ফৌজিয়া নাজনীন সাংবাদিকদের জানান- তথ্য দেয়ার বিষয়ে কোন নির্দেশ বা চিঠি আমি পাইনি।
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মো. মুস্তাফিজার রহমান সাংবাদিকদের জানান- প্রত্যেক সাংবাদিকের তথ্য অধিকারে তথ্য পাওয়ার বিধান আইনেই রয়েছে। নির্দেশনা দেওয়ার পরেও কেন তথ্য দেওয়া হলো না বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।