কিশোরগঞ্জে নিয়ম অমান্য করে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার
আশরাফুল ইসলাম তুষার, চিফ রিপোর্টার।।
প্রকাশিত:
রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
২০৯
বার পড়া হয়েছে
কিশোরগঞ্জে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার। তাছাড়া জ্বালানি তেল (ডিজেল, অক্টেন, পেট্রোল)ও বিক্রি হচ্ছে অবাধে। অনুমোদন ছাড়া বিক্রির বিধান না থাকলেও এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের বোতল ও পেট্রোলসহ দাহ্য পদার্থ বিক্রি হচ্ছে অবাধে। চরম ঝুঁকির মধ্যেই হরদম ব্যবসা করে যাচ্ছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। শহর, গ্রাম-গঞ্জ সর্বত্রই এমন চিত্রই দেখা মেলে। মুদির দোকান, চায়ের দোকান, পান-সিগারেটের দোকান, সারের দোকান, আবাসিক ভবন, লাকড়ির দোকান, ওষুধের দোকানেও অবাধে বিক্রি হচ্ছে এসব গ্যাস সিলিন্ডার।
এছাড়াও পুলিশের সামনেই সড়কের পাশে বিভিন্ন দোকানে চলে জ্বালানি তেলের (ডিজেল, অক্টেন, পেট্রোল) অবাধ বেচাকেনা। কিশোরগঞ্জ শহর ও শহরতলী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশসহ জনবহুল এলাকায় এমন কি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানেও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। বেশির ভাগ দোকানে নেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। কিছু দোকানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র টাঙানো থাকলেও জানা নেই তার ব্যবহার। অনেকের যন্ত্রগুলো অকেজো ও মেয়াদোত্তীর্ণ।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে প্রতিদিন গড়ে দুটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। তবে এর বেশির ভাগই বাসা-বাড়িতে। তাই গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে আরও সতর্ক হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। দাহ্য পদার্থের এমন অসতর্ক ব্যবহার, পরিবহন ও যত্রতত্র বেচাকেনার ফলে মাঝে মাঝেই ঘটছে বিস্ফোরণ। ঘটছে প্রাণহানির মতো ঘটনাও।
সাম্প্রতিক সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে বহু প্রাণহানি ঘটলেও এসব প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। হাটবাজার ও খোলা দোকানপাটে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। নিয়মানুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে হলে ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স, জ্বালানি অধিদপ্তরের লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স অবশ্যই থাকতে হয়। এমনকি গ্যাস সিলিন্ডার মজুতের স্থানটিতেও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের প্রয়োজন। কিন্তু কোনো নিয়মই কোথাও না মানার ফলে বাড়ছে জীবনঝুঁকি ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, অগ্নিপ্রতিরোধ নির্বাপক আইনে সরকার ঘোষিত কোনো জ্বালানির ব্যবসা করলে তাকে মজুত প্রক্রিয়াকরণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স নিতে হবে। আইন থাকলেও মানা হচ্ছে না কোনো নিয়ম।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর যেন বেখবর। তাদের দায়িত্বহীনতায় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। পেট্রোলিয়াম মজুত আইনে বলা হয়েছে, কোনো পেট্রোলিয়াম মজুতাগার, স্থাপনা, ফিলিং স্টেশন, ড্রাম, ট্যাংক, শোধনাগার ও পরিবহন যানে ‘ধূমপান বা আগুন নিষিদ্ধ’ সতর্কবাণী সংবলিত সাইনবোর্ড বা লেবেল লাগাতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানির যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই এসব দোকানে। গ্যাস সিলিন্ডার সংক্রান্ত দুর্ঘটনা রোধে সরকার ১৯৯১ সালে গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা করেছে। এই বিধিমালা অনুযায়ী, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া স্থানীয়ভাবে কাটাছেঁড়া করা সিলিন্ডার ব্যবহার অবৈধ। গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা প্রতিপালনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা হচ্ছে বিস্ফোরক পরিদপ্তর। তবে এ দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, মাঠপর্যায়ে গিয়ে তদারকির মতো জনবল তাদের নেই। বিভিন্ন ধরনের সিলিন্ডার ও রাসায়নিকের অনুমোদন (লাইসেন্সিং) দিতেই তারা গলদঘর্ম ।